ঢাকা , শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫ , ২৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
আমরা দাসত্বের মধ্যে থাকতে চাই না -প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূতরা যে কারও বাসায় যেতে পারেন-পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সব ধরনের ক্রিকেট বর্জনের ঘোষণা ক্লাব সংগঠনের ফের মাঠে নামছে এনসিপি আরও কঠিন হচ্ছে আ’লীগের ফেরার পথ বিএনপি চায় সংসদে জামায়াত গণভোটে আমতলীত ও তালতলীতে ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা, জেলেদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে হাসপাতাল মর্গে বেওয়ারিশ লাশের স্তূপ যানজটে আটকা সড়ক উপদেষ্টা, ১২ কর্মকর্তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অফিস করার নির্দেশ রসায়নে নোবেল পেলেন ৩ বিজ্ঞানী গণভোটে নোট অব ডিসেন্ট গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনার আহ্বান আলী রীয়াজের দৈনিক জনতার প্রকাশক ছৈয়দ এম আন্ওয়ার হোসেনের তৃতীয় মৃত্যুবাষির্কী আজ আজ হংকংয়ের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ ফিফার কমিটিতে বাফুফের সভাপতি তাবিথ আউয়াল আমি আশাবাদী, আমরা ভালো করতে পারব : শমিত সিরিয়ার বিপক্ষে দারুণ জয় পেলো মেয়েরা ভারতের আম্পায়ারই কাল হলো বাংলাদেশের? ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লড়াই করেও জিততে পারলোনা বাঘিনীরা বাংলাদেশ সফরের জন্য টেস্ট দল ঘোষণা দিলো আয়ারল্যান্ড প্রথমবারের মতো মাদ্রাসা ক্রিকেট চালু করতে যাচ্ছে বিসিবি
দল হিসেবে বিচারে তদন্ত শুরু ট্রাইব্যুনালে কর্মকর্তা নিয়োগ

আরও কঠিন হচ্ছে আ’লীগের ফেরার পথ

  • আপলোড সময় : ০৯-১০-২০২৫ ০৩:৫২:২৬ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৯-১০-২০২৫ ০৩:৫২:২৬ অপরাহ্ন
আরও কঠিন হচ্ছে আ’লীগের ফেরার পথ
দোর্দণ্ড প্রতাপে টানা ১৫ বছর ক্ষমতা ধরে রাখা দল আওয়ামী লীগ গত প্রায় ১৪ মাস ধরে দেশের রাজনীতিতে পুরোই অনুপস্থিত। চব্বিশের আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত দলটির কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। কার্যত কোথাও নেই দলটির অস্তিত্ব। বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল কিংবা চোরাগুপ্তা হামলা করে অস্তিত্বের জানান দেওয়ার চেষ্টা করে আসছে আওয়ামী লীগ। এভাবে রাজনীতির দৃশ্যপটে ফিরে আসার চেষ্টায় মরিয়া দলটি। তবে সরকারের নতুন সিদ্ধান্তে আরও চাপে পড়ছে আওয়ামী লীগ। এতে দলটির রাজনীতিতে ফিরে আসার পথ আরও কঠিন হচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। গত বছরের জুলাই-আগস্টে গণহত্যার অভিযোগে এতদিন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বসহ অনেকের বিরুদ্ধে বিচারকাজ চলছিল। এবার মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে রাজনৈতিক দল হিসেবে খোদ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। দলটির বিরুদ্ধে অভিযোগ ইতোমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে একজন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক সফরকালে একটি বিদেশি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছিলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়নি। দলটির কার্যক্রম আপাতত স্থগিত আছে। যেকোনো সময় সেই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হতে পারে। প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্য নিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী বলয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়। পরে অবশ্য সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে, আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। বরং দলটির বিচারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা শিগগিরই উঠে যাচ্ছে না এবং এই দলের বিরুদ্ধে বিচারসংক্রান্ত কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। গত রোববার ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রধান প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগকে ‘অপরাধী সংগঠন’ হিসেবে বিচারের আওতায় আনার জন্য প্রাথমিক তদন্ত শুরু করতে যাচ্ছি। এ বিষয়ে একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। আমরা সেটি গুরুত্ব দিয়ে পরীক্ষা করছি। চিফ প্রসিকিউটরের দেওয়া সেই বক্তব্যের দুই দিন পর ৭ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে, আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে জুলাই গণহত্যায় অভিযুক্ত করে তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তে দলটির অভিযোগ প্রমাণিত হলে নেতাদের পাশাপাশি প্রাচীন দল আওয়ামী লীগেরও বিচার হবে। দলটির নেতাকর্মীরা স্বাভাবিক রাজনীতিতে ফিরে আসার যে স্বপ্ন দেখছিলেন এই সিদ্ধান্তের ফলে তা ধূলিসাৎ হয়ে গেল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে বিবিসি বাংলাকে দেওয়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাক্ষাৎকারে আওয়ামী লীগের বিচারের প্রসঙ্গও রয়েছে। সেখানে তিনি স্পষ্ট করে ইঙ্গিত দিয়েছেন, আওয়ামী লীগ যে অন্যায়-অপকর্ম করেছে এর শাস্তি পেতেই হবে। দল হিসেবে আওয়ামী লীগের রাজনীতি থাকবে কি না সেটার সিদ্ধান্ত জনগণ নেবে বলে জানালেও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, প্রতিটি ঘটনার বিচার হওয়া উচিত। এমনকি আদালতের মাধ্যমে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার হওয়া উচিত বলেও মত দিয়েছেন তিনি। বিএনপির কার্যত প্রধান এবং ভবিষ্যতের সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী তারেক রহমানের এই বক্তব্যের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ফিরে আসার পথ আরও জটিল হলো বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। তাদের মতে, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদকালে আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে ফেরার কোনো সুযোগ না পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে এখন পর্যন্ত বিএনপির ক্ষমতায় ফেরার সম্ভাবনাই প্রবল। আর বিএনপি ক্ষমতায় ফিরলে আওয়ামী লীগ এবং দলটির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে চলমান বিচারকাজ অব্যাহত রাখবে বলেই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে তারেক রহমানের বক্তব্যে। এদিকে জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচারকাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলার রায় হয়ে যেতে পারে চলতি বছরেই। ট্রাইব্যুনালে যাদের বিচারকাজ চলছে তাদের প্রার্থী হওয়ার পথও বন্ধ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া দলটির হাজার হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলা চলমান। অনেক নেতা কারাগারে রয়েছেন। এখনো ধরপাকড় চলছে পুরোদমে। দেশের বাইরে নেতাদের একটি বড় অংশ অবস্থান করলেও দেশের রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টায় তারা এখন পর্যন্ত তেমন কোনো সাফল্য দেখাতে পারেননি। ফলে আওয়ামী লীগের তৃণমূলেও ছড়িয়ে পড়েছে হতাশা। এই অবস্থায় দলটির জন্য খুব তাড়াতাড়ি ফিরে আসা কঠিন হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স